শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:০৬ অপরাহ্ন
মোঃ ইসলাম হোসেন, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি::
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানাধীন হাটিকুমরুল ইউনিয়নের চড়িয়া শিকার উত্তরপাড়া গ্রামে এক গৃহবধু যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে অমানবিক নির্যাতন করেছে স্বামী। প্রায় ৪ মাস ধরে স্বামীর ঘর ছেড়ে বাপের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যৌতুক লোভী স্বামীর অমানবিক নির্যাতনে ১০ মাসের এক শিশু ছেলেকে নিয়ে অত্যান্ত মানবেতর জীবন যাপন করছে শারমিন খাতুন (২০)। এ ঘটনায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধিত-০৩) এর ১১(গ)/৩০ মোতাবেক আদালতে স্বামী মোঃ আবু সুফিয়ান (২৪), শ্বশুর মোঃ সোনাউল্লাহ, শাশুড়ী মোছাঃ সাজেদা খাতুন, ভাসুর মোঃইসমাইল, চাচা শ্বশুর মোঃ জুয়েল ও চাচী শাশুড়ী মোছাঃ রেখা খাতুনের বিরুদ্ধে গত ২৪ এপ্রিল আদালতে মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের চড়িয়া শিকার উত্তরপাড়া গ্রামের মোঃ আব্দুল জুব্বারের কন্যা শারমিনের সাথে একই গ্রামের মোঃ সোনাউল্লার ছেলে মোঃ আবু সুফিয়ানের মুসলিম ধর্মীয় বিধান মতে সামাজিক ভাবে বিবাহ হয়।
বিবাহের এক পর্যায়ে সন্তানের মা হওয়ার পর স্বামীর ঘরে শারমিনের কিছু দিন সুখের কাটলেও যৌতুক লোভী আবু সুফিয়ান দিন দিন নানা উপায়ে কারণে অকারণে অত্যাচার, নির্যাতন শুরু করে। নানা অঘটনের মধ্যে দিয়ে বড় হতে থাকে ১০ মাসের সন্তান আব্দুর রহমান।
এদিকে যৌতুক লোভী পাষান্ড স্বামী আবু সুফিয়ান শারমিনকে তার দরিদ্র পিতা আব্দুল জুব্বারের নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য দিনের পর দিন শারিরিক ও মানসিক ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। অসহায় শারমিন পিতার অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে পারবে না বলে স্বামীকে জানিয়ে দেন।
এ ঘটনার পর স্বামী আবু সুফিয়ান মাদক আসক্ত হয়ে শারমিনের উপর অত্যাচারের মাত্রা দিন দিন বাড়িয়ে দেন। এসব অত্যাচার, নির্যাতন ও শ্বশুড়-শাশুড়ি ও ভাসুরের বিশ্রী ও অশ্রব্য ভাষার আক্রমন সহ্য করতে না পেরে হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে স্বামীর বিরোদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে একটি শালিস দায়ের করেন।
কিন্তু স্বামী আবু সুফিয়ান স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের বিচার অমান্য করে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হেদায়েতুল আলম উক্ত বিচারের একটি শালিসি রোয়েদাদ প্রদান করেন শারমিনকে। এঘটনার শেষ হতে না হতেই শারমিনকে দফায় দফায় যৌতুকের দাবীতে মারধর করতে থাকে পাষন্ড স্বামী আবু সুফিয়ান।
আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে বিষয়টি তদন্তের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নির্দেশ প্রদান করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
শারমিন খাতুন বলেন, যৌতুক লোভী স্বামী আমায় অত্যাচার নির্যাতন করে আমার দরিদ্র পিতার কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য বার বার চাপ প্রয়োগ করেন।
আমি অসহায় হয়ে নিরবে মুখবুঝে অনেক কিছু সহ্য করেছি। আমি স্ত্রী নির্যাতনকারী যৌতুক লোভী স্বামী আবু সুফিয়ানের শাস্তি দাবী করছি।
এ বিষয়ে হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.হেদায়েতুল আলম জানান,মামলাটি আমাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কিন্তু উভয় পক্ষকে দুইবার নোটিশ প্রেরণ করা হলেও ছেলে পক্ষ হাজির না হওয়ার কারনে তদন্তের রিপোর্ট এখনও পাঠানো সম্ভব হয়নি।